Description
আমাদের দেশে যত ধরণের মধু পাওয়া যায় তার মধ্যে যদি আমরা অর্গানিক বা শতভাগ প্রাকৃতিক মধু বলতে পারি তা হলো সুন্দরবনের বিভিন্ন ফুল থেকে সংগ্রহীত প্রাকৃতিক চাকের মধু।
এই মধু শুধুমাত্র পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন থেকেই আহরণ করা যায়। তবে চাহিদা অনুসারে এর যোগানের স্বল্পতা থাকায় এই মধুর দাম যেমন সবথেকে বেশি তেমনি এই মধুতে ভেজালও হয় সবচেয়ে বেশি।সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধুসুন্দরবনের মধু প্রাকৃতিক চাকের শতভাগ অর্গানিক মধু।এই মধু শতভাগ অর্গানিক হওয়ার পিছনের যথেষ্ট কারণ রয়েছে কেননা মৌয়ালিরা যে চাক থেকে মধু সংগ্রহ করে সেই চাক সম্পূর্ণ ভাবে প্রাকৃতিক, এবং মৌমাছি সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশে বিভিন্ন ফুল থেকে মধু আহরণ করে গাছে গাছে চাক বাঁধে।সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাসে খলিশা ফুলে ভরে ওঠে সুন্দরবন।
সুন্দরবনের কেওড়া ফুলের মধু
সুন্দরবনে কয়েকটা ফুলের মধু পাওয়া যায় তার মাঝে কেওড়া ফুলের মধু অন্যতম। সুন্দরবনের নদী ও খালের তীর এবং চরে এ গাছ বেশি জন্মায় তবে লবণাক্ত ভূমিতে বেশি জন্মে।
এই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Sonneratia apetala। এই গাছটি প্রায় ২.৫ মিটার থেকে ২০ মিটার লম্বা হতে পারে।
আমাদের দেশে এই গাছ সুন্দরবনসহ বিষখালী ও বলেশ্বর নদ ঘেঁষা সবুজ বেষ্টনীর অংশ হয়ে
ঘিরে রেখেছে সমুদ্র উপকূল। কেওড়া ফল হরিণ এবং বানরের অনেক পছন্দের খাবার তাই এই গাছের নিচে হরিণের দল দেখা যায়। এই গাছের ফুল গুলো হয় ছোট ছোট হলুদ বর্ণের। উভলিঙ্গের এ ফুল থেকে আমার কেওড়া মধু পেয়ে থাকি।সাধারণত এপ্রিলের শেষের দিকে কেওড়া ফুল ফোটে এই সময় কেওড়া ফুলের মধু সংগ্রহ করা হয়।সুন্দরবনের বাইন ফুলের মধু
সুন্দরবনের একটি অতি পরিচিত গাছ হচ্ছে বাইন। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো Avicennia Officinalis Linn।
বাইন গাছ সাধারণত সুন্দরবনের নদীর ধারে কিংবা বনের গহীনে ভিতরে নীচু এলাকায় জন্মায়। এই গাছ সাধারণত ১৩ মি. থেকে ২০ মি. উঁচু এবং ৪-৫ মি. বেড় হয়ে থাকে।এই গাছ সুন্দরবনে একক ভাবে জন্মে থাকে। তবে কখনো কখনো কেওড়াও গোলপাতার সাথে দেখা যায়। এছাড়াও নতুন মাটি হলেই খাল, নদীর ধারে বা চরে বাইন জন্মে থাকে।এই গাছের কাঠ আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয় না এটা বেশির ভাগ জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হয়।সাধারণত আষাঢ় মাসে বাইন গাছের ফুল ফোটে , শ্রাবণ এবং ভাদ্র মাসে এর ফল পাকে। বাইন গাছের ফুলের রং সাধারণত কমলা হলুদ বর্ণের এবং ১০-১২ মিলিমিটার ব্যাস বিশিষ্ট হয়ে থাকে।যেহেতু আষাঢ় মাসে বাইন গাছের ফুল ফোটে তাই বাইন ফুলের মধু আহরণ শুরু হয় আষাঢ় মাস থেকেই। এই সময় মৌয়ালদের মধু সংগ্রহের জন্য সুন্দরবনে চলে যায়। এ মধু খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়।
সুন্দরবনের গরান ফুলের মধু
গরান ঝোপ জাতীয় জ্বালানি কাঠের চিরসবুজ গাছ। আর বৈজ্ঞানিক নাম Ceriops decandra (Grift), Ding How। এই গাছের গড় উচ্চতা ৪-৮ মিটার, পাতা বিপরীত, পুরু ও উজ্জ্বল।
ফুল ছোট, বৃতি ৫টি খণ্ডে বিভক্ত। ফল সরু, সবুজ বর্ণের এবং ১২ সে. মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। গরান অধিক লবণাক্ত অঞ্চলে ভাল জন্মে। তবে সুন্দরবন ও চকরিয়া সুন্দরবন এলাকায় বেশি দেখা যায় এই গাছ।গরানের প্রাকৃতিক বংশ বিস্তার সফলভাবে হয়ে থাকে বিধায় নার্সারি ও বাগান সাধারণত করা হয় না।এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের পর পরই খলিশা ফুলের সিজন শেষ হয়ে যায়, এরপরই ফোটে গড়ান ফুল। এই সময় মৌমাছি যে মধু আহরণ করে তাই গড়ান ফুলের মধু। গড়ান ফুলের মধু দেখতে একটু লালচে, গাঢ় ও অনেক বেশি মিষ্টি হয়।
Reviews
There are no reviews yet.